অস্ত্রসহ এনাম গ্রেফতার

প্রকাশঃ নভেম্বর ৩০, ২০১৫ সময়ঃ ৬:২০ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৬:২০ অপরাহ্ণ

জেলা প্রতিনিধি

hobigonjঅবশেষে বহু অপকর্মের হুতা মাধবপুর উপজেলার উত্তরাঞ্চলের সন্ত্রাস এনাম বাহিনীর প্রধান এনাম (২৮) কে গ্রেফতার করেছে হবিগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। রবিবার দুপুরে হবিগঞ্জ শহরের রাজনগর সংলগ্ন বৃন্দাবন সরকারী কলেজ এলাকা থেকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই আব্দুল করিমের নেতৃত্বে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারের পর তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে স্বীকার করে তার কাছে অস্ত্র রয়েছে। পরে ডিবি পুলিশের এসআই সুদ্বীপ রায়, এসআই আব্দুল করিম ও এসআই ইকবাল বাহারের নেতৃত্বে এনামকে সাথে নিয়ে ওই এলাকায় অভিযান চালায়। প্রায় দুই ঘন্টা অভিযানের পর তার বাড়ির পার্শ্ববর্তী রগোনন্দন রাবার বাগানের মিস্ত্রী’র বাড়ির সংলগ্ন এলাকার একটি রাবার গাছের নিচে প্রায় এক ফুট মাটি খুড়ে একটি পাইপ গান ও দুই রাউন্ড কার্তুজ গুলি উদ্ধার করে।

ডিবি পুলিশের ওসি মোক্তাদির হোসেন রিপন জানান, মাধবপুর উপজেলার হরিতলা গ্রামের নবীর হোসেনের পুত্র এনাম এলাকায় তার নাম দিয়ে একটি বাহিনী গঠন করে। আর ওই বাহিনী গঠনের পর থেকে এলাকায় চুরি, ডাকাতি ও বালু পাচারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এলাকায় সন্ত্রাসের রাজস্ব কায়েম করে। একের পর এক অপকর্ম করতে থাকে। সম্প্রতি ওই এলাকায় একটি শিল্পকারখানা গড়ে উঠলে সে ওই প্রতিষ্টানের পক্ষে অবস্থান নিয়ে এলাকার নিরীহ জনসাধারনের কয়েক একর জমি দখল করে। আর এর সুবাদে ওই প্রতিষ্ঠানটি তাকে সেল্টার দিতে থাকে। এতে করে সে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে।

এছাড়াও গত কিছুদিন পূর্বে হবিগঞ্জ বৃন্দাবন কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র হরিতলা গ্রামের তৈয়ব আলীর পুত্র সুজন মাহমুদকে প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে দু’হাতের কব্জি ও পায়ের রগ কেঠে ফেলে। এর কয়েকদিন পর তার আপন চাচাতো ভাই আব্দুল হাই’র দুই হাত-পা ভেঙ্গে ফেলে এবং তার পুকুর থেকে জোরপুর্বক মাছ ধরে নিয়ে যায়। এরপর হরিতলা গ্রামের নুর মিয়ার পুত্র ফরাস উদ্দিনকে কুপিয়ে-ক্ষতক্ষিত করে এবং তার বাড়িতে ডাকাতি করে। কয়েকদিন পর একই গ্রামের লতিফ হুসেনের পুত্র তাহির মিয়াকে কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে গাছ চুরি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় শাহপুর বিটের বিট কর্মকর্তা আব্দুর রউফ ও বন রক্ষিদের সাথে গুলি বিনিময় হয়। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারো রাবার বাগান থেকে রাবার ও গাছ চুরি করে এনাম। পরে বিষয়টি নিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা আইন-শৃংখলা কমিটির মিটিংয়ে রেজুলেশন ও ইউনিয়ন পরিষদে রেজুলেশন করা হয়।

এছাড়াও ২০১৪ সালে একই গ্রামের আব্দুল মালেকের পুত্র রেনু মিয়া এবং আব্দুল গনির পুত্র মাসুম মিয়াকে কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে। এছাড়াও সে ওই গ্রামের নিরীহ কৃষক একরাম হুসেনের পুত্র ফজলুর রহমানের ঢাকা-সিলেট মহা-সড়কের পাশে প্রায় কয়েক কোটি টাকা মুল্যের ২ একর ২০ শতক জমি, হাফেজ ইউসুফ মিয়ার কোটি টাকা মুল্যের এক বিঘা জমি, হরিতলা গ্রাম বাসির জন্য নির্মিতব্য মসজিদের ১২ শতক জমি ও হোন্দাই মিয়ার কোটি টাকার ২৬ শতক জমি দখল করে স্থানীয় একটি বহুজাতিক কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেয়। তার ভয়ে এলাকার মানুষ আতংকের মধ্যে দিন কাটাত। কেউ তার অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই রাত বা দিন যখনই তাদের পায় তখনই চলত অমানবিক নির্যাতন।

এদিকে উত্তারাঞ্ছলের মুর্তিমান আতংক এনাম গ্রেফতার হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্থি ফিরে এসেছে। স্থানীয় জনসাধারণ ডিবি পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়ে মিষ্টি বিতরণ করে। পুলিশ জানায়, তার বিরুদ্ধে ৩টি গ্রেফতারী পরোয়ানাসহ বিভিন্ন থানায় ২২ মামলা রয়েছে।

 

প্রতিক্ষণ/এডি/এআরকে

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য



আর্কাইভ

May 2024
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
20G